ডা. মুরাদকে জেলা আ.লীগ থেকে অব্যাহতি
অশালীন ও শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য দেওয়ায় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন নেতারা। জরুরি সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরীসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক দল। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জেলা কমিটির সদস্যের মতামত নিয়ে স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে সোমবার মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে ডা. মুরাদ হাসান পদত্যাগ করেছেন।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র প্রতিমন্ত্রীর তথ্য কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের একান্ত সচিব মাহমুদ ইবনে কাশেমের কাছে জমা দেন। এ তথ্য গিয়াসউদ্দিন নিজেই যুগান্তরকে জানান।
এর আগে দুপুরে পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রণালয়ের সচিবের দফতরে পাঠানো হয়। ই-মেইলে তিনি এ পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে মুরাদ হাসান লেখেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্ব-শ্রদ্ধেয় সালাম নেবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গত ১৯ মে ২০২১ তারিখের স্মারকমূলে আমাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমি আজ ৭ ডিসেম্বর ২০২১ সাল থেকে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক।
এমতাবস্থায়, আপনার নিকট বিনিত নিবেদন, আমাকে অদ্য ৭ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার লক্ষ্যে পদত্যাগপত্র গ্রহণে আপনার একান্ত মর্জি কামনা করছি।
পদত্যাগপত্রে ভুল লিখেছেন মুরাদ। ২০১৯ সালে তাকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও পত্রে তিনি ২০২১ উল্লেখ করেন।
মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী উপজেলা) আসনের সংসদ সদস্য। তার বাবা প্রয়াত মতিউর রহমান তালুকদার জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। বেশ কিছু দিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত বক্তব্য এবং কর্মকাণ্ডের কারণে মুরাদ সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিমন্ত্রীর কিছু অডিও-ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় দেশজুড়ে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় বইছে।
এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকার। বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে না পারলেও সারা দেশে দলের নেতাকর্মীরা তার ওপর বিরক্ত এবং ক্ষুব্ধ।
এ ঘটনায় বিএনপিসহ বিভিন্ন নারী সংগঠনও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা ডা. মুরাদের পদত্যাগ দাবি করেন।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবারের মধ্যেই পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে মুরাদকে।