বড়লেখায় জামানত হারালেন ১৮ চেয়ারম্যান প্রার্থী
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ইউপি নির্বাচনে ১০ ইউপির মধ্যে ৮ ইউপিতে জামানত হারিয়েছেন ১৮ চেয়ারম্যান প্রার্থী। এরমধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ১ জন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী-স্বতন্ত্র প্রার্থী ৪ জন, বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত-স্বতন্ত্র প্রার্থী ৩ জন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ১০ জন। নির্বাচনের বিধি অনুযায়ী, মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট না পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ নভেম্বর উপজেলার দশটি ইউপিতে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হয়। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৪৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›দ্বীতা করেন। নির্বাচনে দশটি ইউপির মধ্যে পাঁচটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। বাকি পাঁচটির মধ্যে তিনটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও দুটিতে স্বতন্ত্র (বিএনপির একজন) প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এরমধ্যে ৮ ইউপিতে ১৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্ণি ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. জোবায়ের হোসেন নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১২১১। জামানত ফেরত পেতে তার ১২৪০ ভোট দরকার ছিল। কিন্তু তিনি তা পাননি।
দাসেরবাজার ইউপিতে দুজন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। এখানে মোট ভোটার ১৩ হাজার ৬৯৪ জন। এরমধ্যে ভোট পড়েছে ৯ হাজার ৭২৩। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিমান কান্তি দাস মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৯৬ ভোট ও কয়েছ আহমদ অটোরিকশা প্রতীকে পেয়েছেন ৬৪ ভোট। জামানত রক্ষায় তাদের পাওয়ার কথা ছিল ১২১৫ ভোট। কিন্তু তারা তা পাননি।
নিজবাহাদুরপুর ইউপিতে মোট ভোটার ১৭ হাজার ৭৭ জন। এরমধ্যে ভোট পড়েছে ১১ হাজার ৪৭৮। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবু সাহেদ ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৩৭ ভোট। জামানত রক্ষায় তার পাওয়ার কথা ছিল ১৪৩৪ ভোট। কিন্তু তিনি তা পাননি।
উত্তর শাহবাজপুর ইউপিতে মোট ভোটার ১৭ হাজার ৩২৩ জন। এরমধ্যে ভোট পড়েছে ১২ হাজার ৯৪২। এখানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী-স্বতন্ত্র প্রার্থী মুমিনুর রহমান টনি ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৫৫৫ ভোট। জামানত ফেরত পেতে তার দরকার ছিল ১৬১৭ ভোট।
দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউপিতে মোট ভোটার ১৯ হাজার ৪৩৯ জন। এরমধ্যে ভোট পড়েছে ১৩ হাজার ৭১৩ ভোট। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী আমির উদ্দিন চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ৭৪ ভোট। জামানত রক্ষায় ১৭১৪ ভোট পাওয়ার কথা থাকলেও তিনি তা পাননি।
দক্ষিণভাগ উত্তর ইউপিতে মোট ভোটার ১২ হাজার ৭৭৪ জন। এরমধ্যে ভোট পড়েছে ৮ হাজার ৯০৬। এই ইউপিতে সাতজন চেয়ারম্যান প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোসাহিদ আহমদ টেলিফোন প্রতীকে পেয়েছেন ২৪ ভোট, আব্দুল মালিক অটোরিকশা প্রতীকে পেয়েছেন ৩১ ভোট, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী-স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আব্দুল জলিল ফুলু ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬ ভোট, আব্দুল মানিক রজনীগন্ধা প্রতীকে পেয়েছেন ৮৪ ভোট, আশরাফ হোসেন
মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৪৯৪ ভোট, জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান টেবিল ফ্যান প্রতীকে পেয়েছেন ৬৪১ ভোট, বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ময়নুল হক চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ৮৮২ ভোট। জামানত রক্ষায় তাদের ১১১৩ ভোট দরকার ছিল। কিন্তু তারা তা পাননি।
সুজানগর ইউপিতে দুজন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। এখানে মোট ভোটার ১৫ হাজার ৯৮৫ জন। এরমধ্যে ভোট পড়েছে ১১ হাজার ৫২। এখানে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ফকরুল ইসলাম চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ২৪০ ভোট ও বিএনিপ সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ১২২০ ভোট। জামানত ফিরে পেতে তাদের ১৩৮১ ভোট পাওয়ার কথা থাকলেও তারা তা পাননি।
দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউপিতে তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। এখানে মোট ভোটার ২৪ হাজার ১০৬ জন। এরমধ্যে ভোট পড়েছে ১৭ হাজার ৮৬ ভোট। এই ইউপিতে তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। এরমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী শরফ উদ্দিন চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৩ ভোট, বেলাল খান ওলন আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৭০ ভোট, সায়দুর রহমান মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ১৫০ ভোট। জামানত রক্ষায় তাদের ২১৩৫ ভোটের দরকার হলেও তারা তা পাননি।
বড়লেখা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এসএম সাদিকুর রহমান বুধবার বিকেলে বলেন, নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী কোনো প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট না পেলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।