শরীরের দুর্গন্ধ দূর করতে….
অনেকের শরীর থেকে অস্বাভাবিক দুর্গন্ধ বের হয়, যা অনেক সময় অন্যের জন্য বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শারীরিক দুর্গন্ধকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ব্রোমহাইড্রোসিস বলা হয়। এটা মানবজীবনের একটা স্বাভাবিক অংশ হলেও মাত্রারিক্ত দুর্গন্ধ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে পারে। তাই সবাই শরীরের দুর্গন্ধ দূর করতে চায়।
তার আগে জেনে নেওয়া যাক সাধারণত কী কারণে শরীরে দুর্গন্ধ হয়ে থাকে। শরীরের অতিরিক্ত ওজন, মসলাদার ও কড়া স্বাদের খাবার, ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা, লিভার রোগ, অতিক্রিয়াশীল থাইরয়েড, বংশগত শারীরিক দশা, মানসিক চাপ ও অত্যধিক ঘাম নিঃসরণ। হঠাৎ করে শারীরিক গন্ধে পরিবর্তন অনুভব করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ এটা মারাত্মক রোগের লক্ষণ হতে পারে। এখানে শরীরের দুর্গন্ধ কমানোর কিছু উপায় দেওয়া হল।
নিয়মিত গোসল:
প্রতিদিন কমপক্ষে একবার গোসল করলে শারীরিক দুর্গন্ধ কমে যাবে। গোসলের সময় সাবান বা শাওয়ার জেল ব্যবহার করা যেতে পারে। বিশেষ করে দুর্গন্ধপ্রবণ স্থানে আবশ্যক। উষ্ণ, আর্দ্র পরিবেশে প্রতিদিন দুইবার গোসল করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান ব্যবহার:
নিয়মিত গোসল করার পরও যদি শরীর থেকে দুর্গন্ধ নির্গত হয় তাহলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান অথবা বডি ওয়াশ অথবা বেনজোয়েল পারঅক্সাইড ক্লিনজার ব্যবহার করতে পারেন।
বগলে ঢেকে রাখার স্থানে ভালো মানের ডিওডোরেন্টের ব্যবহার:
বগলে উপযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করলেও দুর্গন্ধ কমে যাবে। ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করলে বগলের পরিবেশ ব্যাকটেরিয়ার জন্য প্রতিকূল হতে পারে। এই প্রোডাক্ট বগলের দুর্গন্ধকে সুবাস দিয়ে ঢেকে দেয়। অন্যদিকে অ্যান্টিপারস্পিরেন্ট ঘাম নিঃসরণ কমাতে ঘাম গ্রন্থিকে ব্লক করে।
বাতাস চলাচল করে এমন কাপড় পরিধান:
শরীরের দুর্গন্ধ কমাতে ব্রিদেবল ফেব্রিকস তথা বাতাস চলাচল করতে পারে এমন পোশাক পরুন। পলিয়েস্টার, নাইলন ও রেয়নের তুলনায় কটনের মতো ন্যাচারাল ফেব্রিকস ভালো। কটনের মতো প্রাকৃতিক তন্তু বাতাস চলাচলের সুযোগ দেয়, যার ফলে ঘাম উবে যেতে পারে।
লোম পরিষ্কার:
শরীরের যেসব স্থানে লোম বেশি সেখানে অ্যাপোক্রাইন গ্রন্থিও বেশি, যেমন- বগল ও জননাঙ্গ। লোমগুলো ঘাম ধরে রাখে ও ব্যাকটেরিয়া বসবাসের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। তাই নিয়মিত লোম কেটে ফেললে শারীরিক দুর্গন্ধ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
খাদ্যাভাসে পরিবর্তন:
সবথেকে বড় যে পদক্ষেপ সেটা হল খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনা। ডায়েট থেকে মসলাদার খাবার অথবা কড়া স্বাদের খাবার বাদ দিয়ে দেখতে পারেন। গবেষণায় দেখা যায় যারা কড়া গন্ধের খাবার খেয়েছেন তাদের শরীর থেকে বেশি দুর্গন্ধ বের হতে দেখা গেছে। এমনকি অ্যালকোহলও ঘামের গন্ধকে প্রভাবিত করতে পারে।