বালাগঞ্জ-ওসমানীনগরে বেতন বঞ্চিত শিক্ষকদের ‘কষ্টের জীবন’


বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলায় সহজ কোরআন শিক্ষা প্রকল্পের শিক্ষকরা তিন মাস ধরে বেতন বঞ্চিত রয়েছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত শিক্ষা প্রকল্পের শিক্ষকরা তিন মাস ধরে বেতন বঞ্চিত রয়েছেন।তাই দ্রুত বেতন-ভাতা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
সূত্রে জানা যায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) ওই প্রকল্পের মেয়াদ গত বছরের ডিসেম্বর মাসে শেষ হয়েছে। কোরআন শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষকদের বেতন প্রকল্পের মাধ্যমে দেয়া হয়। প্রকল্পটি আবার পাশ হলেই বেতন-ভাতা দেওয়া হবে বলে শিক্ষকদের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকগণ তাদের দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সরকারের সকল নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করে যাচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, গত তিন মাসেও প্রকল্পটি পাশ না হওয়ায় আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদেরকে ফাউন্ডেশনের যেকোনো আর্থিক খাত থেকে সহযোগিতা করার দাবি জানিয়েছেন। একই সাথে সরকারি ভাবে খাদ্য সামগ্রী উপহার দেয়ারও দাবি জানানো হয়েছে।
জানা যায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বালাগঞ্জ উপজেলায় সহজ কোরআন শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষক- ৬১জন, প্রাক-প্রাথমিক কেন্দ্রের শিক্ষক- ৩৯জন, ও দারুল আরকাম ইবতেদায়ি মাদরাসার ২টি কেন্দে- ৪জন শিক্ষক, ওসমানীনগর উপজেলায় সহজ কোরআন শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষক- ৬৫জন, প্রাক-প্রাথমিক কেন্দ্রের শিক্ষক- ৩৭জন, বয়স্ক শিক্ষার শিক্ষক-১জন ও দারুল আরকাম ইবতেদায়ি মাদরাসার ২টি কেন্দ্রে শিক্ষক- ৪জন রয়েছেন। তারা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। এছাড়া শিক্ষকদের সাথে ফাউন্ডেশনের দুই উপজেলা অফিসে কর্মরত মডেল কেয়ারটেকার ও সাধারণ কেয়ারটেকাররাও বেতন বঞ্চিত রয়েছেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন ওসমানীনগর উপজেলার মডেল কেয়ারটেকার কাজী খলিলুর রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আক্ষেপ করে লিখেছেন, ‘বলতেও পারছি না, সইতেও পারছি না। পায়ের নিচে মাটি নেই (প্রকল্প পাশ হলো না)। কবে নাগাদ পাশ হবে তাও কেউ বলতে পারে না। মডেল কেয়ারটেকার, সাধারণ কেয়ারটেকার ও শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দের বেতন নেই, নেই কোনো সরকারি বা বেসরকারি সাহায্য। আজ তৃতীয় মাস শেষ হয়ে চতুর্থ মাস চলছে। বেতনের কথা বলা মানে বোকামি ছাড়া আর কিছুই না। এভাবে এই বিপদে পরিবার-পরিজনকে নিয়ে কিভাবে চলতে পারি কেউ কি বলতে পারেন? অভাব যখন দুয়ারে দাঁড়ায়, বিবেক তখন ঠিক থাকে না। আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আর তো চলতে পারছি না!’
এবিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে কিছুটা দেরি হচ্ছে। প্রকল্পটি আবার একনেকের বৈঠকে পাশ হলেই তারা বকেয়াসহ বেতন পাবেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে অন্যভাবে তাদেরকে কিছু সহযোগিতা করার চেষ্টা করব।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ