বাংলাদেশিদের জন্য স্পেন দূতাবাসের নির্দেশনা
স্পেনের চার শহরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। দেশটির ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে এবং ম্যালোর্কায় দু’জন রোগীর শনাক্ত হওয়ার পরে স্পেনে কোভিড -১৯ এর এটি চতুর্থ ঘটনা কাতালোনিয়ায় সংক্রামিত ব্যক্তিকে সংক্রামক রোগের জন্য রেফারেন্স সেন্টার হাসপাতাল ক্লিনিক ডে বার্সেলোনাতে ভর্তি করা হয়।
পাবলিক জনস্বাস্থ্য বিভাগের সেক্রেটারি জোয়ান গুইস ও স্যালুট দেল সার্ভিস কাতালোনিয়ার আসাম্পাটা রিকার্ড অবিচ্ছেদ্য প্রক্রিয়াগুলির পরিচালকসহ একটি সংবাদ সম্মেলনে নিশ্চিত করেছেন, ‘আক্রান্ত ব্যক্তি ইটালিয়ান নাগরিক যুবতী নারী। তাঁর বয়স (৩৬) বছর। তবে তিনি বার্সোলার বাসিন্দা।’
আক্রান্ত ব্যক্তি বলেন, গত ১২ই ফেব্রুয়ারি ইতালি মিলান এবং বার্গামো অঞ্চলে গিয়েছিলেন। পরে ২২ ফেব্রুয়ারি বার্সেলোনা আসার পর রাত্রে অসুস্থতার সামান্য লক্ষণ অনুভব করায় ‘ক্লিনিকাল হাসপাতালে’ যোগাযোগ করেছিলেন এবং তার পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে ইতালি থেকে আসা ২৫ জন যাত্রী ছিলেন তাদের সকলের নাম ঠিকানা ইতিমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে।
এদিকে স্পেনের চার শহরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে মাদ্রিদে বাংলাদেশ দূতাবাস। নির্দেশনায় একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর এবং কর্মস্থলের বাইরে চলাফেরা না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়, সবাই ‘পাবলিক প্লেসে’ মাস্ক ব্যবহার করবেন বলে দূতাবাস প্রত্যাশা করে। আতঙ্কগ্রস্ত না হয়ে ধৈর্য ধারণ করে সবাই সাহসের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করবেন বলেও প্রত্যাশা করছে দূতাবাস।
দূর-দূরান্তে বসবাসরত প্রবাসীদের একান্ত প্রয়োজন ছাড়া যে কোনো ভ্রমণ এমনকি দূতাবাস ভ্রমণেও নিরুৎসাহিত করা হয় নির্দেশনায়।
এতে আরও বলা হয়, বার্সেলোনাসহ দূর-দূরান্তের কিছু শহরে প্রবাসীদের দোরগোড়ায় কনস্যুলার সেবা পৌঁছে দেয়া মুজিববর্ষের অন্যতম অঙ্গীকার বিধায় আপনারা আপনাদের শহরে কনস্যুলার টিম পাঠানোর জন্য দূতাবাসের ফেসবুকে বার্তা পাঠাতে পারেন। তবে কনস্যুলার টিম পাঠানোর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট শহরে প্রবাসীদের সংখ্যার ওপর নির্ভর করবে।
দূতাবাস যে কোনো বিপদ-আপদে প্রবাসীদের পাশে থাকতে অঙ্গীকারাবদ্ধ বলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২ হাজার ৭৬৩ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ হাজার ৯৬৭ জন। ভাইরাসের ভয়াবহতা চীনে বেশি হলেও দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে। এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী করোনা।
চীনের বাইরে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে এ পর্যন্ত ১ হাজার ১৪৬ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে মারা গেছেন কমপক্ষে ১১ জন। তবে চীনের বাইরে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৯৫ হলেও মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। সিঙ্গাপুরে আক্রান্তের সংখ্যা ৯১ জন, সেখানে পাঁচ বাংলাদেশিও রয়েছেন।
স্পেনের তেনেরিফ, বার্সেলোনা, ভ্যালেন্সিয়া ও মাদ্রিদে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন পাঁচ জন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দূতাবাস প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এ নির্দেশনা জারি করল।