এক মাসে সীমান্তে ১১ বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে বিএসএফ
গত প্রায় এক মাসে দেশের সীমান্ত এলাকায় ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পরিচালক (পরিকল্পনা) লে. কর্নেল সৈয়দ আশিকুর রহমান।
বুধবার বিজিবি সদর দফতরের নিজ কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সীমান্ত হত্যাকাণ্ড বলতে সাধারণভাবে বোঝা যায় যে, সীমান্তের সন্নিকটে, তা কিন্তু না। অনেক সময় দেখা যায় ভারতের সীমান্তের ভেতরে ৫ থেকে ১৫ কিলোমিটারের ভেতরও হয়। হয়তো দেখা যায়, কোনো নিরীহ মানুষ ভারতের সীমান্তে ঢুকে যাচ্ছে, হয়তো গরু আনার জন্য গেছে, তখনও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে যখন আমাদের ওপাশ থেকে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়, তখনই আমরা জানতে পারি।
করোনা ভাইরাস বিষয়ে সীমান্তে কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হলে বিজিবি অন্যান্য সংস্থাকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে বলেও তিনি জানান।
তিনি বলেন, সীমান্তে অনেক চোরাকারবারি চিহ্নিত হয়েছে। অনেকে এখনও চিহ্নিত হয়নি। তবে সীমান্তে যারাই এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত আছে, তাদের আমরা নজরদারিতে রেখেছি। তারা যখনই কোনো কিছু পাচারের চেষ্টা করছে, তখনই আমরা তাদের গ্রেফতার করছি।
বিজিবি পরিচালক বলেন, সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা নিয়মিত প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে চিঠি দিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। এছাড়া আমরা আমাদের সীমান্ত এলাকার মানুষদের সচেতন করছি, যাতে ভুল করে বা অন্য কোনো কারণে তারা যেন সীমান্ত এলাকা অতিক্রম না করে। সীমান্ত এলাকায় যেসব স্পর্শকাতর জায়গা রয়েছে, সেসব জায়গা চিহ্নিত করে আমরা জনবল বৃদ্ধি করেছি। স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি। সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিক উপায়েও কাজ চলছে।
তিনি আরও জানান, বিজিবি গত জানুয়ারিতে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্য স্থানে অভিযান চালিয়ে ৯৭ কোটি ১৮ লাখ তিন হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান ও মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে। ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৭২ জন চোরাচালানিকে এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৩৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক ও ২ জন ভারতীয় নাগরিককে আটক করা হয়েছে।
লে. কর্নেল সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, বিজিবির মাদকবিরোধী অভিযানে জব্দকৃত মাদকের মধ্যে রয়েছে সাত লাখ ২৩ হাজার ৬৮৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৪০ হাজার ৭৪২ বোতল ফেনসিডিল, ১১ হাজার ৭৯২ বোতল বিদেশি মদ, ২৯৮ লিটার বাংলা মদ, ৫৪৯ ক্যান বিয়ার, ৭৬২ কেজি গাঁজা, ৬৬৫ গ্রাম হেরোইন, চার হাজার চারটি ইনজেকশন এবং দুই হাজার ৪৩১টি সেনেগ্রা ট্যাবলেট। জব্দকৃত অন্যান্য চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ১৪ কেজি ৪৮২ গ্রাম সোনা, পাঁচ হাজার ৮২৮টি ইমিটেশন গহনা, ৩৩ হাজার কসমেটিক সামগ্রী, ১৫০০টি শাড়ি, ২৭ হাজার শার্ট ও থ্রিপিস, কাঠ, চা পাতা, পাথরের মূর্তি, ২১টি ট্রাক, ছয়টি পিকআপ, একটি প্রাইভেটকার, ১১টি অটোরিকশা। এছাড়া দুটি পিস্তল, চারটি বন্দুক, দুটি ম্যাগজিন, ১০ রাউন্ড গুলি এবং ৫৪টি মোটরসাইকেল।