নেশার টাকা না পেয়ে ৩ ছেলেকে বিষ খাওয়ালেন বাবা, ছোট ছেলের মৃত্যু
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার খান্দারপাড়া ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে ৩ সন্তানকে কীটনাশক (বিষ) পান করিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে মাদকাসক্ত বাবা আলম শেখ (৪০)। এতে ছোট সন্তান হোসেন শেখ (৩) মৃত্যু বরণ করেছে।
রোববার (১৪ নভেম্বর) সকাল ৮টায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মুকসুদপুর থানা পুলিশ বাবা আলম শেখকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে।
হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে শিশু সিয়াম শেখ (১০) এবং হাসান শেখ (৩)। গত বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটায় পাষণ্ড বাবা আলম শেখ।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্ত্রীর কাছে নেশার টাকা চাইলে না দেওয়ায় স্ত্রীকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে তিন সন্তানকে জোর করে কীটনাশক খাইয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের অবস্থার অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। কিন্তু তাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকায় ফরিদপুর নিতে না পারায় স্থানীয়দের সহায়তা শনিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে ফরিদপুর মেডিকেলে নেয়া হয়। শিশু তিনটির মধ্যে ছোট শিশুটির মৃত্যু হয় এবং বাকি দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শিশুদের মা সিমা বেগম (৩০) জানায়, তার স্বামী আলম শেখ মাদকাসক্ত। তার কাছে নেশার টাকা চাইলে না দেয়ায় তাকে ব্যাপক মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে শিশু তিনটি কীটনাশক (বিষ) পানিতে মিশিয়ে জোর করে পান করিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। শিশু তিনটিকে ফরিদপুর মেডিকেলে ভর্তি করা হলে। তার ছোট সন্তান হোসেন মৃত্যুবরণ করেছে। বাকি দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর মিয়া জানান, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে এবং মাদকাসক্ত হওয়ায় নিজ ইচ্ছায় তিন সন্তানকে হত্যার উদ্দেশে বিষ পান করিয়েছে। পরে স্থানীয়রা শিশুদের উদ্ধার করে মুকসুদপুর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় শিশুদের চাচা (আসামির খালাতো ভাই) মিলু মোল্লা বাদি হয়ে
মুকসুদপুর থানায় একটি মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাদকাসক্ত বাবা আলম শেখকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করে। এই ঘটনায় ছোট শিশু হোসেন শেখ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে।