বিশ্বের ৫০০ কোটিরও বেশি মানুষ পানি পাবেন না !

 

মাত্র ২৯ বছর বাকি! অর্থাৎ ২০৫০ সালে বিন্দু পরিমাণ পানি পাবেন না বিশ্বের ৫০০ কোটিরও বেশি মানুষ। সম্প্রতি জাতিসংঘের অধীনস্থ ওয়ার্ল্ড মেটিরিওলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে

‘দ্য স্টেট অব ক্লাইমেট সার্ভিসেস ২০২১: ওয়াটার’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এই সমস্যা থেকে কীভাবে বেরিয়ে আসা সম্ভব হতে পারে তা নিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আসন্ন বিশ্ব সম্মেলনে রাষ্ট্রনেতাদের আলোচনা করারও আর্জি জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। জাতিসংঘের সেই ‘সিওপি-২৬’ শীর্ষক শীর্ষ সম্মেলন আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উষ্ণায়নের কারণে দ্রুতহারে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য পৃথিবীর পানি স্তর উদ্বেগজনকভাবে নীচে নেমে যেতে শুরু করেছে। যা বিশেষভাবে নজরে এসেছে গত ২০ বছরে। ভূপৃষ্ঠ, ভূপৃষ্ঠের ঠিক নীচের স্তর, বরফ ও তুষারে জমা পানির স্তর গত দু’দশকে যে হারে কমেছে তা আগে কখনও হয়নি। গত ২০ বছরে এই পানি স্তর বছরে এক সেন্টিমিটার করে নেমে যাচ্ছে। আর সেটা ২০১৮ সালেই টের পেয়েছেন বিশ্বের ৩৬০ কোটি মানুষ। বছরে এক মাস তারা কোনো পানিই পাননি।

পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্র অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিতে পারলে ২০৫০ সালে পৌঁছে ছিটাফোঁটা পানিও পাবেন না ভারতীয় উপমহাদেশসহ বিশ্বের ৫০০ কোটিরও বেশি মানুষ। চরম পানির অভাব দেখা দেবে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম অংশ, ভূমধ্যসাগর, উত্তর ও দক্ষিণ আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া, পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ায়। চরম পানির অভাবে ভুগবে দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়াও।

ডব্লিউএমওর প্রধান পেত্তেরি তালাস বলছেন, পানি স্তরের এই অধোগতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে অ্যান্টার্কটিকা ও গ্রিনল্যান্ডে। বি‌শ্বের বিভিন্ন প্রান্তে জনসংখ্যার বেশি ঘনত্বের এলাকাগুলোতেও পানি স্তরের এই অধোগতি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যথেষ্টই। এটা আরও চিন্তার বিষয় কারণ পৃথিবীর মোট সঞ্চিত পানির মাত্র শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ ব্যবহারযোগ্য। বাকিটা ব্যবহার করা আদৌ সম্ভব নয়। সেই পানি অনেক গভীরে রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, গত ২০ বছরে বন্যাঘটিত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনা তার আগের দু’দশকের চেয়ে ১৩৪ শতাংশ বেড়েছে।

ডব্লিউএমওর প্রধানের কথায়, দ্রুতহারে উষ্ণায়নের জন্য গত ২০ বছরে বায়ুমণ্ডলের আর্দ্রতা তার আগের দু’দশকের চেয়ে সাত শতাংশ বেড়েছে। ঘনঘন বন্যার জন্য দায়ী এই আর্দ্রতা বৃদ্ধিই। বন্যায় মৃত্যু আর অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে এশিয়ায়। এখানে বন্যার আগাম সতর্কতা জারির ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করে তোলার ব্যবস্থা অবিলম্বে নিতে হবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে।

প্রতিবেদনটি আরও জানিয়েছে, খরার তীব্রতা ও মেয়াদও আগের দু’দশকের নিরিখে গত ২০ বছরে বেড়েছে ৩০ শতাংশ। খরায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, হয়ে চলেছে আফ্রিকার দেশগুলো।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ