দেশে দুই মহাদুর্যোগ আওয়ামী লীগ ও করোনা: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বললেন, দেশে এক ভয়াবহ দুর্যোগ চলছে। একটা হচ্ছে আওয়ামী দুর্যোগ, আরেকটা হচ্ছে করোনা দুর্যোগ। এই দুই মহাদুর্যোগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ অতিক্রম করছে এক অকল্পনীয় ক্রান্তিকাল।

দেশে রাজনীতি নেই, গণতন্ত্র নেই, চিকিৎসা নেই, মানুষের মনে সুখ নেই, অর্থনীতি সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। দলের নয়াপল্টনের কার্যালয়ে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

নিজের সুস্থতার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রিজভী বলেন, “আমার সুস্থতার জন্য দেশে-বিদেশে নেতা-কর্মী-সমর্থকসহ দেশবাসী দোয়া করেছেন, আমি তাদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।”

আরও বলেন, ‘দেশের জনগণ নিশিরাতের লুটেরা সরকারের জাঁতাকলে অবিরাম পিষ্ট হচ্ছে। গণতন্ত্রের নামে চলছে এক ব্যক্তির স্বৈরশাসন। এ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ বিনা দোষে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে বছরের পর বছর ধরে। তিনি এখন বাসায় থাকলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি মুক্ত নন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ওনার সাজা স্থগিত করা হয়েছে। সাজা স্থগিত হলে তো তার ওপর কোনো বিধিনিষেধ থাকার কথা না।”

“বেগম জিয়া সম্পূর্ণ মুক্ত থাকলে সরকারের লাগামহীন লুটপাট-অপকর্মে বিপত্তি ঘটবে এবং নিশিরাতের নির্বাচন করতে পারতো না। এ জন্য তাকে এখন গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। গণতন্ত্রের মা-কে প্রতিহিংসাপরায়ণতার অনলে হত্যা করতে চায় সরকার। আমরা অবিলম্বে তার গৃহ অন্তরীণ অবস্থার অবসান চাই। সম্পূর্ণ মুক্তি চাই। দেশনেত্রীর মুক্তি না হলে গণতন্ত্রের মুক্তি ঘটবে না। দেশবাসীর মুক্তি মিলবে না।”

আরও বলেন, “বিশ্বের দেশে দেশে জনবিচ্ছিন্ন কর্তৃত্ববাদী ভোটারবিহীন সরকারের অবস্থা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মতো। গুম, খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, জুয়া-জোচ্চুরি চালিয়ে রাষ্ট্রে এক ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে জনগণকে স্তব্ধ করার চেষ্টা করে। এ জন্য তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রাইভেট বাহিনীতে পরিণত করে জনগণকে বন্দী করে রাখার নানা কৌশল অবলম্বন করে। আইন-প্রশাসন ও আদালতকে নিজেদের মতো করে সাজিয়ে জনগণের নাগরিক স্বাধীনতাকে হরণ করে। সুতরাং সরকার জবরদস্তিমূলকভাবে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে যতই নিজেদের সাফল্যগাথা প্রচার করুক জনগণ এসব বিশ্বাস করে না । জনগণ অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এই সরকারের পতন ঘটানোর জন্য।”

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “র‌্যাব-পুলিশ পরিবেষ্টিত ওবায়দুল কাদের প্রতিদিন একটি করে সংবাদ সম্মেলন করেন। আর এই সংবাদ সম্মেলনের একটাই বিষয় বিএনপির বিরুদ্ধে আজগুবি, কল্পিত সব মিথ্যাচার ও কুৎসা উদ্‌গিরণ করা। মিথ্যা বলতে বলতে সত্য ভুলে গেছেন তিনি। জনগণ তার কথা শুনলে টিভির চ্যানেল বদলে দেয়। তারা নিশিরাতে একটি পার্লামেন্ট বানিয়েছে। মনের মাধুরী মিশিয়ে পার্লামেন্টের বিরোধী দল বানিয়েছে।”

আদালত কিংবা নির্বাচন কমিশন সরকারের মাইক্রোফোন হিসেবে কাজ করছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, “সব তাদের হওয়ার পরও প্রতিদিন তাদের কেন বিএনপির বিরুদ্ধে বলতে হচ্ছে? কেন স্বাধীনতার ঘোষক, জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে হচ্ছে? কেন ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলছে অব্যাহত ষড়যন্ত্র? কেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চলছে প্রতিনিয়ত কুৎসা রটানো?”