যে কারণে বন্ধ অনলাইনে রিটার্ন জমা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনলাইনে রিটার্ন জমার লিংকটি বন্ধ। এখন আর কেউ চাইলেও অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারছেন না। ফলে অনলাইনে কর দিতে ইচ্ছুক করদাতারা বিপাকে পড়েছেন।
অথচ অনলাইনে রিটার্ন জমায় করদাতাদের আগ্রহ বাড়াতে এনবিআর কত কিছুই না করলো। ৫১ কোটি টাকা খরচ করে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলো। আবার গত জুন মাসে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে প্রথমবার অনলাইনে রিটার্ন জমা দিলে ২ হাজার টাকা করছাড় প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু বাস্তবে করছাড়ের সেই সুযোগ নিতে পারছেন না করদাতারা। বাজেটের উদ্যোগও মার খেল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভিয়েতনামের এফপিটি ইনফরমেশন সিস্টেম করপোরেশন নামের একটি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান এটি তৈরি করেছিল। গত তিন বছর সচলও ছিল। ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এনবিআরের অনলাইনে রিটার্ন জমার এ সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নিজের রিটার্ন জমা দিয়ে অনলাইন ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ওই বছর তেমন একটা রিটার্ন জমা পড়েনি। পরের তিন বছর (২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছর) করদাতারা অনলাইনে রিটার্ন দিয়েছেন।
অনলাইনে রিটার্ন জমায় তেমন উৎসাহও ছিল না। এই উৎসাহ বাড়াতে চলতি অর্থবছরে ২ হাজার টাকার বিশেষ করছাড় দেয়া হয়। এতে করদাতাদের মধ্যে উৎসাহও দেখা দেয়। কিন্তু সেই সুযোগ নিতে পারছেন না করদাতারা। এনবিআর নিজেই এ সুযোগ দিলেও ব্যবস্থাটি বন্ধ রেখেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআরের সদস্য হাফিজ আহমেদ মুর্শেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ভিয়েতনামের এফটিপি প্রতিষ্ঠানটি এ সফটওয়্যার তৈরি করেছিল। কিন্তু তাদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় অনলাইনে রিটার্ন জমার লিংকটি বন্ধ রয়েছে। তাই করদাতারা রিটার্ন দিতে পারছেন না। ইতিমধ্যে ভিয়েতনামের ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করার চিন্তাভাবনা চলছে। নতুন করে চুক্তি না হলে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেয়ার সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, জনগণের টাকা খরচ হলো, কিন্তু করদাতারা সেবা পেল না। সফটওয়্যারটি যখন তৈরি করা হয়, তখন এর সঙ্গে কর কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করা হয়নি। এনবিআরের একটি অটোমেশন প্রকল্পেও ফল আসেনি। এনবিআরের কর্মকর্তাদের মধ্যেই অটোমেশনে আগ্রহ কম। অনৈতিক লেনদেনের সুযোগ থাকায় তারা সনাতনী পদ্ধতিতেই থাকতে চান।