পুষ্টিগুণের বিচারে কোনটি বেশি স্বাস্থ্যকর আখরোট না কাজুবাদাম!

আখরোট ও কাজুবাদাম -দুটিই পুষ্টিগুণে ভরপুর খাবার। দুই ধরনের বাদামেই খনিজ, ভিটামিন এবং হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী ফ্যাট আছে। দুটি বাদাম একাধিক খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এমনিতেও বাদাম দুটি খাওয়া যায়। তারপরও পুষ্টিগুণের বিচারে কোনটি বেশি স্বাস্থ্যকর তা নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে।

পুষ্টিবিদরা বলছেন, যে পরিমাণ আখরোটে ১৮৫ ক্যালরি পাওয়া যায়, সেই পরিমাণ কাজুবাদামে ক্যালরি থাকে ১৭০। আবার আখেরোটে ফ্যাট থাকে ১৮ দশমিক ৫ গ্রাম, আর কাজুবাদামে ১৫ গ্রাম। আখরোটে প্রোটিনের পরিমাণ ৪ দশমিক ৩ থাকলে কাজুবাদামে থাকে ৬ গ্রাম।

এছাড়া আখেরোটে ফাইবার ২ গ্রাম হলে কাজুবাদামে থাকে ৩ গ্রাম। পুষ্টিবিদদের মতে, দুই ধরনের বাদামেই যথেষ্ট স্বাস্থ্যকর পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তবে কোন কারণে এটি খাচ্ছেন সেটার ওপর নির্ভর করেই বাদামের ধরন বাছাই করা উচিত।

 

ওজন কমাতে চাইলে :

বাদামে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন ও ফাইবার থাকায় এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা অনুভূত হতে সাহায্য করে। সব ধরনের বাদাম বিপাকক্রিয়া বাড়িয়ে ওজন হ্রাসে ভূমিকা রাখে।

জার্নাল রিসার্চ ইন মেডিসিন সায়েন্সে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুসারে, নিয়মিত কাজুবাদাম খান এমন ব্যক্তিরা যারা কাজুবাদাম খান না তাদের চেয়ে ৬৫ শতাংশ বেশি ওজন করতে পেরেছেন। অন্যান্য বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, এই বাদামটি ওজন কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

আখরোট নিয়ে এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ৩০ গ্রাম আখরোট খান তারা দ্রুত ওজন কমাতে পারেন। অবশ্য আখরোট খেলে ওজন কমবে এমন গবেষণা কমই হয়েছে।

 

 

আলঝেইমার রোগীদের জন্য :

কাজুবাদাম, আখরোট এবং হ্যাজনাটের মিশ্রণ আলঝেইমার রোগীদের জন্য উপকারী। ছয়টি গবেষণায় বলা হয়েছে, কাজুবাদাম মস্তিষ্ককে আরও ভালো কাজ করতে সহায়তা করে। অন্যদিকে ১৯ টি গবেষণা বলছে, আখরোট মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বেশি কার্যকর।

 

হৃদরোগের জন্য :

গবেষণায় দেখা গেছে, যে ব্যক্তিরা প্রতিদিন বাদাম খান তাদের হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁ’কি ৪০ শতাংশ কমে যায়। কাজুবাদাম এবং আখরোট দুটিই খারাপ কোলেস্টেরল কমায়, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং প্রদাহ হ্রাস করে।

কাজুবাদামে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ই ও ম্যাগনেসিয়াম হৃৎপিন্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। অন্যদিকে আখরোটে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান ও ওমেগা থ্রি সমৃদ্ধ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।

 

 

রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ :

বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, কাজুবাদামে ফ্যাট, প্রোটিন এবং ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা উন্নত করতে সহায়তা করে। কাজুবাদাম খাবারের গ্লাইসেমিক সূচককে কমাতে সাহায্য করে। এ কারণে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। অন্যদিকে আখরোটে প্রচুর পরিমাণে চর্বি, প্রোটিন এবং ফাইবার রয়েছে। তবে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে কতটা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে তা জানা যায়নি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ