দিরাইয়ের আলহাজ্ব আব্দুল মতলিব উচ্চ বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার টংগর গ্রামের আলহাজ্ব আব্দুল মতলিব উচ্চ বিদ্যালয় মাধ্যমিক পর্যায়ে এমপিওভূক্ত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষামন্ত্রী ড. দিপু মনি, সুনামগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ ড. জয়া সেন গুপ্তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন আলহাজ্ব আব্দুল মতলিব উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি, বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী, অভিভাবকবৃন্দ এবং বিদ্যালয়ের শুভাকাঙ্ক্ষি, এলাকাবাসী ও বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আলহাজ্ব মাসুক মিয়ার পরিবার।
বুধবার নতুনভাবে এপিওভুক্তি হয়েছে এক হাজার ৬৩৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সিলেট বিভাগের ১৮১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে ২৬টি বিদ্যালয় এপিওভুক্তি করা হয়। তন্মধ্যে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার টংগর গ্রামের আলহাজ্ব আব্দুল মতলিব উচ্চ বিদ্যালয় অন্যতম।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আলহাজ্ব মাসুক মিয়ার ছেলে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির দাতা সদস্য মুহাম্মদ সুজন মিয়া বলেন, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ছায়ার মত পাশে আছেন আমার চাচা যুক্তরাজ্য প্রবাসী আলহাজ্ব জাহান মিয়া, কুটি মিয়া শাহ আদিল, বড় ভাই মোতাহির মিয়া, বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এবং বিদ্যালয়ের শুভাকাঙ্ক্ষি।
এলাকাবাসীকে সর্বোপরি সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জনান সুজন মিয়া।
সুজন মিয়া বলেন- বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আমার শ্রদ্ধেয় পিতা মরহুম আলহাজ্ব মাসুক মিয়ার লালিত স্বপ্ন আজ বাস্তবায়িত হয়েছে। বেঁচে থাকলে তিনিই সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন। উনার
জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য সুজন মিয়া জানান- আলহাজ্ব আব্দুল মতলিব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আলহাজ্ব মাসুক মিয়ার বড় ছেলে মোঃ মোতাহির মিয়ার অক্লান্ত শ্রমে শিক্ষার আলো ছড়িয়েছে পুরো ভাটি এলাকায়।
তাঁর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে অন্তত মনে রাখতে হবে, শিক্ষার প্রকৃত স্বাদ পেতে হলে জাতিকে সু-শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। কারণ শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি উন্নতি লাভ করতে পারে না। যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত সে জাতি তত বেশি উন্নত।
বর্তমান প্রতিযোগিতা মুলক বিশ্বে সু-শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। আধুনিক তথ্য নির্ভর বিশ্বায়নের যুগে গতানুগতিক ধারার সরকারী শিক্ষা ব্যবস্থাই পর্যাপ্ত নয়। এক্ষেত্রে বেসরকারী উদ্যোগে যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সেগুলোকে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নীতিবান শিক্ষকদের কোয়ালিটি বৃদ্ধি, সময়নিষ্ঠা ও নিজ কর্তব্য সম্পর্কে আরও সচেতন করে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তবেই দেশের পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠীকে সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করা সম্ভব হবে।
তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির যথাযথ ব্যক্তি বর্গের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলতে চাই সরকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর চলমান অবস্থার দিকে নজর দিন তবেই সুচিত হবে গুনগত মানসম্মত একটি সুন্দর শিক্ষা ব্যবস্থা। সর্বোপরি সুন্দর একটি জাতি যা বিশ্বায়নের যুগে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম হবে ইনশাআল্লাহ। এটাই জাতির প্রত্যাশা।
মোঃ মোতাহির মিয়া আরও বলেন- আমার বাবা মরহুম আলহাজ্ব মাসুক মিয়া স্কুলের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন, আরো পরিশ্রম করেছেন অত্র এলাকার সকল পেশাদার জনগণ।
আমার পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী ডঃ দিপু মনি ও মাননীয় এমপি ডঃ জয়া সেন গুপ্তা এবং আমার অত্র এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, স্কুল শিক্ষক, স্কুল ম্যানিজিং কমিটি, সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
দেশবিদেশ আপনারা সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।
আলহাজ্ব আব্দুল মতলিব উচ্চ বিদ্যালয়ের শুরু থেকেই যিনি দিনরাত পরিশ্রম করে খুবই দক্ষতার সাথে বিদ্যালয়টি পরিচালনা করে যাচ্ছেন, যার শ্রম ও দক্ষতায় আজ হাওর পারের মানুষ সুশিক্ষিত হচ্ছে তিনি হলেন, বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান। তিনি বলেন, হাওরবেষ্টিত দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নে ভাটি এলাকায় আলহাজ্ব আব্দুল মতলিব উচ্চ বিদ্যালয়। সেই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা শীতকালে বিভিন্ন গ্রাম থেকে পায়ে হেঁটে এবং বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকি নিয়ে নৌকাযোগে লেখাপড়া করছে। এই এলাকার মানুষ বুঝতে পারছেন শিক্ষাই জাতির আলো।
প্রথমে আমি বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আলহাজ্ব মাসুক মিয়ার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। উনি একজন সহজ, সরল ও উদার মনের মানুষ ছিলেন। এই অবহেলিত জনগোষ্ঠীর শিক্ষার ক্ষেত্রে উনার অবদান অনস্বীকার্য। আমি ধন্যবাদ জানাই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতার ছোট ভাই কুটি মিয়া শাহ আদিলকে যিনি যুক্তরাজ্যে থেকেও সার্বক্ষনিক যোগাযোগ এবং অর্থ সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। আর যার কথা না বললেই নয় তিনি হলেন, প্রতিষ্ঠাতার বড় ছেলে অত্র বিদ্যালয়ের সাবেক সহ সভাপতি বর্তমানে যুক্তরাজ্য প্রবাসী জনাব মোতাহির মিয়া। দেশে অবস্থানকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের সার্বক্ষণিক ভাল-মন্দ দেখাশোনা, মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সর্বত্র বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র নিয়ে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন। তাছাড়া প্রবাসে থেকে ও ফোনে সব অফিসে যোগাযোগ করে যাচ্ছেন। তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম আর মেধার কারনেই আজ আমরা সফল হয়েছি। তাছাড়া এখনও কয়েকজন বেসরকারী শিক্ষক, ইমামের বেতনসহ বিভিন্নভাবে অর্থ সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন মরহুম আলহাজ্ব মাসুক মিয়ার পরিবারের সদস্যরা।
বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের প্রতি তিনি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান এবং বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি, স্কুল শিক্ষক, কর্মচারী, সকল শুভাকাঙ্ক্ষীসহ এলাকাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।