ছাতকের একজন মানবিক ডাক্তার মোজাহারুল ইসলাম
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারনে দেশজুড়ে যখন সরকারি বেসরকারি হাসপাতালের অনেক চিকিৎসক নানা অজুহাতে চেম্বার বন্ধ রেখে স্বেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টিনে চলে গেছেন; ঠিক সেই মুহুর্তে ছাতকের কৈতক ২০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. মোজাহারুল ইসলাম হাসপাতালে ও নিজ চেম্বারে প্রতিদিন শতশত রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। করোনা দুর্যোগে ডা. মোজাহারুল ইসলামের সেবা পেয়ে দারুন খুশি এখানকার দক্ষিনাঞ্চলসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার সর্বস্থরের জনসাধারণ।
চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি তিনি লকডাউনে থাকা পরিবার, অসহায় দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন সাধ্যমতো। সাহায্য পৌঁছে দিচ্ছেন হতদরিদ্র মানুষের ঘরে ঘরে। এছাড়া তিনি টেলিমেডিসিন ও ফেইসবুকের মাধ্যমে ফ্রিতে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁকে ফোন করলেই মিলছে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শ।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার সারা দেশে সাধারণ ছুটি ও রাজধানীসহ বিভিন্ন অঞ্চল লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ভয়াবহ এ পরস্থিতির উন্নতির লক্ষ্যে ছাতক উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের পাশাপাশি মাঠে কাজ করছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরাও। ইতোমধ্যে সিলেটে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ছাতকের কৃতি সন্তান অধ্যাপক ডাঃ মঈন উদ্দিনের মৃত্যুসহ সারা দেশের প্রায় সাড়ে ৩শ’ চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এমন সংকটময় মুহুর্তে সিলেটসহ ছাতকের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের অধিকাংশরাই চেম্বার বন্ধ করে দিলেও ডা. মোজহারুল ইসলাম সরকারি হাসপাতালে ও নিজ চেম্বারে চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রেখেছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাওয়ায় আর্তপীড়িত জনগোষ্ঠীসহ এলাকার সচেতন মহল সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
ডা. মোজাহারুল ইসলাম জানান, ‘মানবসেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করেছি। আমার চিকিৎসা পেশায় আসার প্রধান কারণই হলো মানব সেবা। তাই এ অঞ্চলের মানুষ যাতে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য আমি করোনা ভাইরাসের এ সংকটময় সময়েও দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।’ নিজের পরিবারকে নিরাপদ রাখতে গত মার্চ মাসের ২৮ তারিখ থেকে সিলেটস্থ তার বাসায় না গিয়ে আইসোলেশনে থেকেই দায়িত্ব পালন করছেন বলেও জানান তিনি।