এমন নববর্ষ আসে নি আগে কখনো
আজ ১৪২৭ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন। মহামারি করোনায় জাতি আজ বাকরুদ্ধ। আজ মঙ্গলবার পহেলা বৈশাখ। চৈত্রসংক্রান্তির মাধ্যমে ১৪২৬ সনকে বিদায় জানিয়ে বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হল নতুন বছর ১৪২৭। কিন্তু এবার ভিন্ন এক পরিস্থিতিতে এলো বাঙালির এই উৎসব।
প্রথমবারের মতো নতুন বছরকে বরণ করে নেবে তেমন কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সবচেয়ে সামনের সৈনিক যারা সেই ডাক্তার-নার্সরা এখনো সত্যিকার অর্থেই অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) না থাকায় তারা আতঙ্কের মধ্যে দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে করোনাভাইরাস মোকাবিলা নয়, যেকোনো রোগের চিকিৎসায় কার্যত অচলাবস্থা চলছে। চিকিৎসা-সংশ্লিষ্টরা পিপিই না পেলেও জেলা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে পিপিই পরে ফটোসেশনের হিড়িক পড়েছে।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বাণীতে দেশবাসীসহ বাঙালিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
যে অভাবিত দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছি আমরা, তা অনেকটা কান্নাসিক্ত বসন্তের মতোই। মানবজাতি এখন জ্ঞানে গরিমায়, শক্তিতে বিজ্ঞানে বহু যোজন পথ পাড়ি দিয়েছে, কিন্তু কোভিড-১৯-এর নিকট নতজানু দাসের ন্যায় আত্মসমর্পণ করছে।
আজ ১৪ এপ্রিল, বাঙালির প্রাণের উৎসব নববর্ষের সকল আয়োজন আমরাও বাতিল করতে বাধ্য হয়েছি। অথচ, কতই-না হৃদয় উদ্ভাসিত করা বাংলার অপূর্ব মাটিগন্ধমাখা এই প্রাণের পহেলা বৈশাখ!
এই বছরের এই সন এখন মিশে গেছে বাঙালির জাতিসত্তায়। পহেলা বৈশাখ আমাদের ভিতরে পরমতসহিষ্ণুতা, সদ্ভাব, ভ্রাতৃত্ববোধ ও মনুষ্যত্বের দীক্ষা দেয়। আমাদের অন্তরকে বিকশিত করে, নিজের মাটিকে চিনায়, শেকড়কে চিনায়। এই বার্তা দেয় যে, আমরা আলাদা কেউ নই।
করোনার এই কালবেলায় বাংলা নববর্ষ আমাদের এই শক্তি দিচ্ছে- দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে সম্মিলিত শক্তি দিয়ে। জানি না, করোনা আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে। সকলের শুভ হউক। শুভ নববর্ষ।