করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩২৮৫
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে তিন হাজার ২৮৫ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫ হাজার ২৮৫ জনে।
নতুন এই ভাইরাস ইতোমধ্যে বিশ্বের ৭৬টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। অন্যদিকে এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৬৮৮ জন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের (এনএইচসি) তথ্য অনুযায়ী, বুধবার (৪ মার্চ) চীনে আরো ৩১ জন মারা গিয়েছেন। চীনে মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ১২ জন। করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৪৩০ জন। এর মধ্যে মোট ৫২ হাজার ২০৮ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন।
চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৬৬ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। অপরদিকে মারা গেছে ৩৫ জন।
ইরানে মোট দুই হাজার ৯২২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৯২ জন মারা গেছেন।
ইতালিতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৭ জনে। দেশটিতে ইতোমধ্যে তিন হাজার ৮৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে জাপান ১২, হংকং, স্পেন, ইরাক, অস্ট্রেলিয়ায় দুইজন করে এবং ফ্রান্সে চারজন মারা গেছে। ফিলিপাইন, তাইওয়ান, এবং থাইল্যান্ডে একজন করে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মতো সমস্যা দেখা দেয়। যার সমাধান স্বরুপ এখনো কোনো টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেনি বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়। নিউমোনিয়ার মত লক্ষণ নিয়ে নতুন এ রোগ ছড়াতে দেখে চীনা কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ঠিক কীভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়েছিল- সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নন বিশেষজ্ঞরা। তবে ধারণা করা হচ্ছে, উহানের একটি সি ফুড মার্কেটে কোনো প্রাণী থেকে এ ভাইরাস প্রথম মানুষের দেহে আসে। তারপর মানুষ থেকে ছড়াতে থাকে মানুষে।
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।
নভেল করোনাভাইরাস এর কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনো তৈরি হয়নি। ফলে এমন কোনো চিকিৎসা এখনও মানুষের জানা নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলাই আপাতত এই রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়।