গোমর ফাঁস: করোনাভাইরাসে ৪০০০০ মৃত্যু

চীন ছাড়াও বিশ্বের মোট ৫০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, ইতালি, জাপান, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রাদুর্ভাব বেশি।

এদিকে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি স্টারের হাতে ফাঁস হয়ে যাওয়া একটি পরিকল্পনার দাপ্তরিক নথি এসেছে।

এই নথিতে বলা হয়েছে, লন্ডনে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে’ ৪০ হাজার মানুষ মারা যেতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে লন্ডনে গণকবর তৈরীর প্রস্ততি নেয়া হচ্ছে। সামরিক বাহিনী মোতায়েনের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া সম্পাদন করা হবে।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি স্টার অনলাইনের এক নিবন্ধে এসব কথা বলা হয়েছে।

ডেইলি স্টার অনলাইনের কাছে যে দাপ্তরিক নথি এসেছে সেখানে লন্ডনে বড় আকারের মহামারীর (করোনাভাইরাসের কারণে) কবলে পড়ার আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে।

এই জরুরী পরিকল্পনাটি ‘লন্ডন রেসিলিয়েন্স পার্টনারশিপ (এলআরপি) কর্তৃক তৈরি করা হয়েছে।

এতে লন্ডন রেসিলিয়েন্স টিমও (এলআরটি)’ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে ‘গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বা ইভেন্ট’ হিসেবে ভাইরাল প্রাদুর্ভাবের ক্ষেত্রে কী কী বিকল্প থাকবে সে বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে।

এদিকে বুধবার ব্রিটেনের মন্ত্রিপরিষদ অফিস স্থানীয় কর্তপক্ষকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে। এই নির্দেশনায় বৃহত্তর পরিসরে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে পরিকল্পনার প্রস্তুতি সংক্রান্ত বিষয়ে বলা হয়েছে।

‘লন্ডন এক্সট্রা ডেথস ফ্রেমওয়ার্ক’ শিরোনামের নথির সন্ধান পেয়েছে ডেইলি স্টার অনলাইন। এই নথিতে করোনভাইরাস সংক্রান্ত সঙ্কটের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য বিকল্পগুলোর কথা বলা হয়েছে।

এ নথিতে উল্লেখ রয়েছে, করোনাভাইরাসে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটলে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে।

বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে-মৃতদেহগুলোর ক্ষেত্রে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে; কীভাবে তাদের সংরক্ষণ এবং কবর দেওয়া যেতে পারে ইত্যাদি।

করোনাভাইরাসে খুব ‘খারাপ পরিস্থিতি’র মধ্যে প্রায় ৩৯৬০০ মানুষ মারা যেতে পারে বলে এখানে অনুমান করা হয়েছে।

৪২-পৃষ্ঠার এই নথিতে (করোনাভাইরাসে) গণ-মৃত্যুর ইস্যুটি সামনে উঠে এসেছে। এখানে বিরূপ পরিস্থিতিতে লন্ডন কর্তৃপক্ষের জন্য প্রস্তাবিত সমাধানের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

নথিগুলিতে বলা হয়েছে যে, লন্ডনে করোনাভাইরাস মহামারী রূপে থাবা বসালে ‘সম্ভাব্য খারাপ পরিস্থিতিতে’ প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১০৫৮ জন মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বলা হয়েছে, অতিরিক্ত মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে সেক্ষেত্রে পরিকল্পনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে মরদেহ দাফন করতে আরো স্থানকে বিবেচনায় আনতে হবে।

এক্ষেত্রে গুদাম এবং হ্যাঙ্গারগুলিকেও বিবেচনায় রাখা হতে পারে বলে প্রাপ্ত নথি থেকে জানা গেছে।

ওই নথিতে আরো বলা হয়েছে, মৃত্যুর ঘোষণাপত্রের ক্ষেত্রে সহজতর আইনকে বিবেচনায় রাখা হবে। মরদেহগুলো আরও দ্রুত দাফন করতে বা আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মরদেহগুলো পরিবহন ও সরিয়ে নেয়ার জন্য সামরিক বাহিনীর সহায়তা প্রয়োজন হতে পারে।

উল্লেখ্য, চীনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ৮৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আজ শনিবার চীনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭৯ হাজার। সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমস এ খবর জানিয়েছে।

এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বলছে, বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩ হাজারেরও বেশি।

সূত্র : ডেইলি স্টার অনলাইন (ইউকে)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ