ইংল্যান্ডের নাটকীয় জয়

ডারবানে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে প্রথমে বোলিং করতে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাট হাতে নেমে তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে প্রথম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। আগের ম্যাচের হিরো উইকেটরক্ষক জশ বাটলারকে ২ রানে শিকার করেন পেসার লুঙ্গি এনগিডি। এরপর ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন আরেক ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো। ২৫ বলে ৫২ রানের জুটি গড়েন তারা। বড় ইনিংস খেলার আভাস দিয়েও, রয় ৪০ ও বেয়ারস্টো ৩৫ রানে আউট হন। ২৯ বলের ইনিংসে ৩টি চার ও ২টি ছক্কা হাকান রয়, ১৭ বল মোকাবেলা করে ২টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন বেয়ারস্টো।

জয়ের জন্য শেষ ২ বলে ৩ রান দরকার পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার। আর শেষ ওই দু’বলে দুই উইকেট তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডকে দুর্দান্ত জয়ের স্বাদ দিলেন ডান-হাতি পেসার টম কারান। এই দুর্দান্ত জয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজে সমতা আনলো সফরকারী ইংল্যান্ড। গতরাতে সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে ইংলিশরা ২ রানে হারায় প্রোটিয়াদের। ফলে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা ফিরলো। ইস্ট লন্ডনে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১ রানে জিতেছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা।

রয়-বেয়ারস্টোর ঝড়ে ১২ ওভারেই শতরানে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ডের সংগ্রহ। মিডল-অর্ডারে অধিনায়ক ইয়োইন মরগান ২৭ ও জো ডেনলি ১ রানে ফিরলেও, ইংল্যান্ডকে বড় সংগ্রহ এনে দিয়েছেন বেন স্টোকস ও মঈন আলি। ষষ্ঠ উইকেটে মাত্র ১৭ বলে ৫১ রানের জুটি গড়েন স্টোকস-মঈন। এতেই ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ৭ উইকেটে ২০৪ রানের বড় সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড। ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩০ বলে অপরাজিত ৪৭ রান করেন স্টোকস ও ১১ বলে ৩৯ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন মঈন। এমন ইনিংস খেলার পথে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কা মারেন এ অলরাউন্ডার। ইংল্যান্ডের এনগিডি ৪৮ রানে ৩ ও আন্দিলে ফেলুকুওয়াও ৪৭ রানে ২ উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ২০৫ রানের লক্ষ্যে ঝড়ো গতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শুরু করেন দুই ওপেনার তেম্বা বাভুমা ও অধিনায়ক কুইন্টন ডি কক। ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছেন ডি কক। তার ব্যাটিং দৃঢ়তায় পাওয়া প্লেতেই ৬৯ রান পায় দল। অষ্টম ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ৯২ রানে বিচ্ছিন্ন হন বাভুমা ও ডি কক। জুটিতে ডি ককের অবদান ২২ বলে ৬৫ রান। ইংল্যান্ড স্পিনার মঈন আলির এক ওভারে তিনটি ছক্কা হাকানো ইনিংসে ২১ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কক। টি-২০ ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে দ্রুত হাফ-সেঞ্চুরি রেকর্ডও গড়েন তিনি। সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফ-সেঞ্চুরির ইনিংসে ২টি চার ও ৮টি ছক্কা হাকিয়ে শেষ পর্যন্ত ইংলিশ পেসার পেসার মার্ক উডের শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন ডি কক।

এরপর দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। বাভুমা ২৯ বলে ৩১ ও ডেভিড মিলার ১৬ বলে ২১ রান করে ফিরেন। তবে ভ্যান ডার ডুসেন এক প্রান্ত আগলে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন। ১৭তম ওভারের তৃতীয় বলে বলে ১৩ রান করা জন-জন স্মুটস ও চতুর্থ বলে ফেলুকুওয়াও শুন্য রানে ফিরলে ম্যাচ নিয়ে চিন্তায় পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।

কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার আশা ধরে রেখেছিলেন ডুসেন ও ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস। তবে শেষ ওভারে জয়ের সমীকরনটা কঠিনই ছিলো প্রোটিয়াদের। ১৫ রান দরকার ছিলো তাদের। তবে কাজটা সহজ করে ফেলেন প্রিটোরিয়াস। প্রথম বলে রান নিতে না পারলেও, পরের তিন বলে যথাক্রমে ৬,৪ ও ২ রান নেন প্রিটোরিয়াস। এতে শেষ ২ বলে ৩ রান দরকার পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার। কিন্তু শেষ দুই বলে দুই উইকেট তুলে নেয় ইংল্যান্ডকে দারুন এক জয়ের স্বাদ দেন কারান। প্রিটোরিয়াস ১৩ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কা ২৫ রান করেন। শেষ বলে আউট হন বিয়র্ন ফরচুইন। ষষ্ঠ উইকেটে মাত্র ১৯ বলে ৪৪ রানে জুটি গড়ে প্রোটিয়ারদের জয়ের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন ডুসেন ও প্রিটোরিয়াস। ২৬ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় অপরাজিত ৪৩ রান করেন ডুসেন। বল হাতে ইংল্যান্ডের কারান-জর্ডান ও উড ২টি করে উইকেট নেন। ১১ বলে ৩৯ রান করা ইংল্যান্ডের মঈন আলী নির্বাচিত হন ম্যাচ সেরা।

আগামীকাল সেঞ্চুরিয়ানে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-২০।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ