এক বৃক্ষপ্রেমিক শ্যাওড়া গাছ দিয়ে দৃষ্টিনন্দন ঘোড়া তৈরি করেছেন!

শ্যাওড়া গাছকে বিশেষ উপায়ে কেটে ছেঁটে ঘোড়ার আকৃতি দিয়ে জনগণকে মুগ্ধ করেছেন পাবনার চাটমোহরের এক বৃক্ষপ্রেমিক। দুলালুর রহমান নামের এ ব্যক্তি চাটমোহরের রেলওয়ে স্টেসনের পাশে অবস্থিত ভাই বোন নার্সারির মালিক।

নার্সারির গেটেই দৃষ্টিনন্দন জোড়া ঘোড়া তৈরি করেছেন দুলাল। এটি দেখতে অনেকে ভিড় করছেন, আবার অনেকে নিজ বাড়ির গেটে গাছের ঘোড়া তৈরির জন্য তাকে অর্ডারও দিচ্ছেন।

দুলালুর রহমান জানান, মূলত শখ করে তিনি এটি তৈরি করেছেন। গত এক বছরের চেষ্টায় তার শ্রমটি সার্থক হয়েছে। লোহার রড দিয়ে প্রথমে তিনি ওয়ার্কশপ থেকে ঘোড়ার আকৃতি তৈরি করে আনেন। চারপাশে জিআই তারের নেট লাগিয়ে দেন। এরপর তিনি তার নার্সারির গেটে সেটি স্থাপন করেন।

দুই সারি শ্যাওড়া গাছের উপর দাড়িয়ে আছে দুটি ঘোড়া। এলাকার অনেকে এ ঘোড়া দুটোকে জোড় ঘোড়া বলেন। দুলালুর রহমান জানান, এ জোড় ঘোড়া দেখতে প্রতিদিন অনেক মানুষ আসেন। এখন তার নার্সারিতে ভেতরের চেয়ে বাইরের দর্শনার্থীরাই বেশি ভিড় করছেন।

তিনি আরো জানান, এরই মধ্যে তিনি বেশ ক’টি গাছের ঘোড়া তৈরি করে দেয়ার জন্য অর্ডার পেয়েছেন। শুরুতে ব্যসায়ীকভাবে এটি করেননি। নিছকই শখে করেছিলেন। কিন্তু এখন জনগণের অনুরোধে তাকে বাণিজ্যিকভাবেই গাছের ঘোড়া বানিয়ে দিতে হচ্ছে। জনগণের চাহিদামত জায়গায় গিয়ে ঘোড়া বানিয়ে দেয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক নিচ্ছেন বলে জানান তিনি। এরই মধ্যে ৪টি বাড়িতে জোড় ঘোড়া তৈরির অর্ডার পেয়েছেন।

চাটমোহরের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, দুলালুর রহমানের নার্সারিতে এসে গেটে গাছের ঘোড়া দেখে তিনি বিমোহিত।

নুরুল ইসলাম বলেন, দুলাল কেবল জোড় ঘোড়াই নয় অগ্নি ঝাউ, কাটা ঝাউ, কামিনী, মাধবীলতাসহ বেশ কিছু গাছ বিশেষ বিশেষ আকার দিয়ে ডিজাইন করেছেন। সেগুলো দেখেও তিনি মুগ্ধ।

পাশের উপজেলা ভাঙ্গুড়ার পাটুলিপাড়া থেকে এসেছিলেন আব্দুর রহিম। তিনি জানান, ঘোড়া দুটির মডেল গাছ দিয়ে তৈরি করা। এ যেন এক নিপুণ কারিগরের কাজ।

অন্যান্য এলাকার অনেক দর্শনার্থী আসছেন। দেখতে এসে অনেকে সেলফিবাজিতে মেতে উঠছেন। অনেকে সিএনজি মোটরসাইকেল থেকে নেমে এ জোড় ঘোড়াকে নিয়ে সেলফি তুলছেন।

কেউ কেউ বলছেন, গাছকেও বিশেষ যত্ন পরিচর্যা করে নানা আকার দেয়া সম্ভব। সেটি চাটমোহরে এসেই তারা বুঝতে পারছেন।

পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আজাহার আলী জানান, একজন বৃক্ষপ্রেমিক এমন একটি কাজ করেছেন বলে তিনি শুনেছেন। যেভাবেই তৈরি করেন না কেনো, তিনি গাছ তো লাগিয়েছেন, সেগুলোর যত্ন পরিচর্যা করে বিশেষ আকৃতি গঠন করেছেন। তার এমন ভালো কাজের সাফল্য কামনা করি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ