মৌলভীবাজারের সীমান্ত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান
ঢাকার রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক করোনা নমুনা পরীক্ষায় জালিয়াতি মামলার প্রধান আসামী শাহেদ ওরফে শাহেদ করিম মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে পালানোর গুঞ্জনে কমলগঞ্জ উপজেলাসহ পুরো মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে তোলপাড় চলে। শাহেদের সন্ধানে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মৌলভীবাজারের সীমান্ত দিয়ে ভা রত পালিয়ে যেতে পারে এমন খবরে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো বিশেষ নজরদারি চালানো হয়। সোমবার রাতভর ঢাকা থেকে আসা র্যাবের একটি টিম সহ আইনশৃংখলা বাহিনীর তৎপরতা শেষে মঙ্গলবার এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শাহেদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
আত্মগোপনে থাকা ঢাকার রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক শাহেদ কমলগঞ্জে অবস্থান করার গুঞ্জনে কমলগঞ্জের সীমান্ত এলাকায় চষে বেড়িয়েছেন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বেশ কয়েকজন ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার কর্মীরা। সোমবার রাতভর ছুটে চলা কমলগঞ্জের কুরমা সীমান্ত থেকে ধলাই সীমান্তসহ কমলগঞ্জের অন্য সীমান্ত এলাকা। সর্বশেষ মঙ্গলবার সকাল থেকে অবস্থান ছিল ধলই সীমান্তে। গত সোমবার দিবাগত রাত ১ টা ৩৮ মিনিটে কালো রংয়ের দুটি গাড়ি কমলগঞ্জের শমশেরনগর দিয়ে দ্রুতগতিতে ছুটে চলা আর মঙ্গলবার দুপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি গাড়ি ধলই সীমান্ত থেকে বেরিয়ে যাওয়া সব মিলিয়ে ভাল কোনো বার্তা না পেলেও জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদকর্মী সবার চোখ ছিলো কমলগঞ্জে।
সারা মৌলভীবাজার জেলা জুড়ে খবর ছড়িয়ে পরে যে শাহেদ মৌলভীবাজারের সীমান্তবর্তী দুই উপজেলা শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জের কোথাও লুকিয়ে রয়েছে। এমন খবর পেয়ে মাঠে নামে র্যাব-পুলিশ। পুলিশ বিভিন্ন সড়কে এলাকায় যানবাহনে তল্লাশী চালিয়েছে। শমশেরনগরেও আকস্মিক পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়। শমশেরনগর চৌমুহনা থেকে ভারতের ত্রিপুরাগামী চাতলাপুর চেকপোস্ট সড়কের মুখে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা দাঁড়িয়ে যানবাহন তল্লাশি করতে দেখা গেছে।
পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সিলেট বিভাগের সাথে ভারতের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ফলে সব যায়গায় সতর্ক অবস্থানে আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে কোন জায়গায় শাহেদ আছে এরকম নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আশিক বিল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে একাধিক দল শাহেদকে গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করছে।
শমশেরনগর পুলিশ ফাড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী বলেন, শাহেদ এই দিকে আছে এমন কোন নির্দিষ্ট তথ্য নেই। যেহেতু সীমান্ত এলাকা তাই সে পালানোর চেষ্টা করতে পারে এটা সন্দেহ অতিরিক্ত সতর্কতা গ্রহন করেছি।
মৌলভীবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষন রায় বলেন, শাহেদ সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করছে, এমন খবর সর্বত্র ছড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এখন পর্যন্ত সীমান্ত এলাকাগুলো নজরদারীতে রয়েছে।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, শাহেদ এখানে আছে এই রকম সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য নেই। তবে আমরা সব সময় সতর্ক আছি। এই সতর্কতার নির্দেশ সব যায়গায় দেওয়া আছে।