বড়লেখায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার : লায়লার পুরনো ভিটেতে নতুন ঘর

পুরোনো ভিটায় নতুন ঘর হবে। সেই ঘরে আবারও পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করতে পারবেন এটি ছিল তার কাছে স্বপ্নের মতো। অবশেষে তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। পুরনো ভিটেতে নতুন ঘর উঠেছে। সেই ঘরে পরিবারের সবাইকে নিয়ে উঠতে পেরেছেন তিনি। বলা হচ্ছে বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের করমপুর গ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা আয়াজ আলীর দরিদ্র মেয়ে লায়লা বেগমের কথা। সম্প্রতি প্রশাসন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নতুন ঘরের চাবি তাকে হস্তান্তর করেছে। তিনি পুত্র-পুত্রবধূ, নাতি-নাতনিসহ নতুন ঘরে উঠেছেন।
সরেজমিনে লায়লার বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। নতুন ঘর পেয়ে কেমন লাগছে জানতে চাইলে লায়লা বলেন, ঝড়ে ঘর ভাঙার পর চিন্তায় পড়ে যান। অসহায় ‘হুরুতাইন (বাচ্চা) লইয়া এ ঘরে ও ঘরে রইছি। কি কষ্ট বুঝাইতাম পারতাম নায়। ঘুম লাগছে না। শরীরের অবস্থা নাই। পেটে ভাত দিতাম পাররাম না। ঘর বানাইতাম কিলা। নতুন ঘর অইব বিশ্বাস করছি না। সরকারের সবার লাগি দোয়া করিয়ার। ঘর পাইয়া মনে অনেক শান্তি লাগের। আগে মেঘের সময় জেগে থাকতাম রাতে। ঘুমাতে পারতাম না। এখন আর ঘুমের কষ্ট হবে না।’
জানা গেছে, ৩ জুন দুপুরের দিকে ঝড়ের সময় উপজেলার করমপুর গ্রামে ট্রান্সফরমারসহ বিদ্যুতের একটি খুঁটি ভেঙে পড়ে লায়লা বেগমের বসতঘর দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পান ওই বসতঘরের বাসিন্দারা। ঘর ভাঙার খবরটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। খবরটি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পরিবেশ মন্ত্রী এবং ইউএনও’র দৃষ্টিগোচর হয়। পরদিন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের নির্দেশে ইউএনও মো. শামীম আল ইমরান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি ঘর হারানো অসহায় পরিবারটিকে তাৎক্ষণিক খাদ্য সহায়তা হিসেবে ২০ কেজি চাল, ৫ কেজি আলু, ২ কেজি ডাল, ২ কেজি পেঁয়াজ এবং ১ কেজি তেল এবং ৫ হাজার টাকার একটি চেক প্রদান করেন। ইউএনও প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ঘরটি নতুন করে তৈরি করে দেয়া হবে বলে পরিবারটিকে আশ্বস্ত করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দু’সপ্তাহের মাথায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘আশ্রয়ণ-২’ প্রকল্পের আওতায় যার জমি আছে ঘর নাই-তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ কর্মসূচী থেকে সেমি-পাকা ঘর তৈরি করে দেয়া হয়। ১ লাখ টাকায় টিনের চাল ও বেড়া মেঝেসহ আধাপাকা ঘর, পাকা বারান্দা ও একটি শৌচাগার নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া বড়লেখা উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ ব্যক্তিগত উদ্যোগেও টাকা ও খাদ্যসামগ্রী দিয়েছেন।
ইউএনও মো. শামীম আল ইমরান বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তান লায়লা বেগমের ঘর ভেঙে পড়ায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘর হারানো অসহায় পরিবারটিকে তাৎক্ষণিক খাদ্য সহায়তা এবং ৫ হাজার টাকার একটি চেক প্রদান করেন। নতুন করে ঘর বানানোর সামর্থ ছিল না। তাই প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প থেকে নতুন ঘরটি তৈরি করে দেয়া হয়েছে।’

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ