জাফলং ফেরত ৫২ নারী শিশু পুরুষ তাহিরপুরে হোম কোয়ারেন্টিনে
সিলেটের গোয়াইঘাট উপজেলার জাফলং হতে ধান কাঁটতে পরিবার পরিজন নিয়ে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে নিজ বাড়ি ফেরা ৫২ নারী শিশু পুরুষকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
শুক্রবার মধ্যরাতে তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসন,স্বাস্থ্য বিভাগ ও থানা পুলিশ খেঁটে খাওয়া শ্রমিক ও তাদের সাথে থাকা নারী শিশু সন্তানদের প্রাথমিকভাবে নিজ নিজ বসতবাড়িতে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার বিষয়টি ণিশ্চিত করেন।
শুক্রবার রাত সোয়া ১টায় তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হোসেন জানান, জাফলং ফেরত এসব শ্রমিক ও তাদেও পরিবারের লোকজনকে শনিবার সকালে তাদেও প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দায়িত্বশীল স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিক্যাল টিম স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন।
উপজেলার উওর শ্রীপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান খসরুল আলম জানান, আমার ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের দুধের আউটা গ্রামের এসব শ্রমিক সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় বালু পাথর শ্রমিকের কাজ করতেন।
এলাকায় বর্তমানে বোরো ফসলী জমির ধান কাঁটতে তারা সেখানকার ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান লেবু মিয়ার প্রত্যায়নপত্র সাথে নিয়ে শুক্রবার রাতে ভাড়াকৃত দুটি পিক আপে করে চলে আসার পথে বিষয়টি জানতে পেরে আমি তাৎক্ষণিক ভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানা পুলিশকে অবহিত করেছি।
তাহিরপুর থানার ওসি মো. আতিকুর রহমান জানান,সিলেটের জাফলং হতে দুই নারী, ১০ শিশু ও ৪০ শ্রমিক নিজ বাড়ি ফেরার পথেই বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে অবহিত করে বাড়ি ফেরা প্রত্যেকের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিজেন ব্যানার্জী রাত ০১.৩০ মিটিটে জানান, বাড়ি ফেরা এসব শ্রমিক, তাদের সাথে আসা পরিবারের নারী ও শিশু প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।
এরপর যেসব শ্রমিক ধান কাঁটতে যেতে ইচ্ছুক সেসব শ্রমিকদের শরীরে করোনা বা করোনা উপসর্গ নেই কেবল তাদেরকেই হাওরে ধান কাঁটার শ্রমিক হিসাবে নিয়োজিত করা হবে এবং সাথে থাকা অন্যদের ১৪দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। এ নিয়ে আতংকিত না হয়ে সর্ব সাধারণকে সচেতন হওয়ার আহবান জানান ইউএনও।
প্রসঙ্গত: বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ১২ এপ্রিল বিকেল ০৫টা হতে সুনামগঞ্জ জেলাকে অনিদ্রিষ্ট কালের জন্য লকডাউন (অবরুদ্ধ) ঘোষণা করেন। লকডাউনের ওই বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয়, আঞ্চলিক, মহাসড়ক কিংবা নৌ পথে অন্য জেলা হতে কেউ এ জেলায় প্রবেশ বা এ জেলা হতে কেউ অন্য জেলায় গমনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে।
লকডাউন চলমান থাকাকালে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন বোরো ফসলী হাওরে ধান কাঁটার শ্রমিক সংকট মোকাবেলায় জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট কেবল স্বাস্থ্য বিধি মেনে বিশেষ ব্যবস্থায় এ জেলায় ধান কাঁটার শ্রমিকদের প্রবেশে ব্যবস্থা রেখেছেন।