খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি

সরকারের কাছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য মুক্তি চেয়ে আবেদন করেছে তার পরিবার। গত বুধবার খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর এ চিঠি দেন। খালেদা জিয়ার অনুমতি নিয়েই এই চিঠি দেয়া হয়েছে।

চিঠিতে শামীম ইস্কান্দার জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। তার দ্রুত উন্নত চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন। এজন্য তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়া হোক। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

এই চিঠিতে খালেদা জিয়ার প্যারোলের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু লেখা নেই।

চিঠির বিষয়ে জানতে শামীম ইস্কান্দার কিংবা খালেদা জিয়ার পরিবারের কারও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এর ১১ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে দেখে এসে তার স্বজনরা বলেছিলেন, তারা খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে চান। এক্ষেত্রে প্যারোলে মুক্তি হলেও তাদের আপত্তি নেই। এরপরই রাজনৈতিক অঙ্গনে খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি জোরালোভাবে আসতে থাকে। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয় তারা এ বিষয়ে কিছুই জানে না।

পরে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে ওবায়দুল কাদেরকে মির্জা ফখরুল ফোন করেন বলে গণমাধ্যমে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশিত হয়। এর দুদিন পর মির্জা ফখরুল সাফ জানিয়ে দেন ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে তার প্যারোল নিয়ে কোনো কথা হয়নি।

জানা গেছে, খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে সরকার ও বিএনপি এবং তার পরিবারের মধ্যে একটা সমঝোতা চলছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। জামিনে বিদেশে যাবেন খালেদা জিয়া এমন শর্তে পুনরায় হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। ২৭ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন আবেদনে নতুন কোনো কারণ না পাওয়ায় কথা জানিয়ে তা খারিজ করে দেন।

এর ফলে আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তির পথ সঙ্কুচিত হয়ে যায়। ফের সামনে চলে আসে প্যারোলের বিষয়টি। এমন পরিস্থিতিতে পরিবারের পক্ষ থেকে তার সাময়িক মুক্তি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এতে খালেদা জিয়ার সম্মতিও রয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, পরিবারের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ইতিবাচক মনোভাব দেখালে খালেদা জিয়া শেষ মুহূর্তে প্যারোলের জন্য আবেদন করতে পারেন। এ ব্যাপারে তার সম্মতি নিতে পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার চাপ দেয়া হচ্ছে। শনিবারও পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করেন। সেখানে তারা জামিন ও প্যারোলের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বলে জানা গেছে।

এর আগে পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে বিএসএমএমইউ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বরাবর একটি চিঠি দেয়া হয়। খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, তার অবস্থা খুবই খারাপ। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়া প্রয়োজন। পরিবারের পক্ষ থেকে তার চিকিৎসা ব্যয় বহন করা হবে বলেও চিঠিতে বলা হয়েছে।

জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে বন্দি আছেন খালেদা জিয়া। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দণ্ডিত হওয়ার পর তাকে নেয়া হয় পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে। কয়েক দফায় সেখান থেকে এনে তাকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা দেয়া হয়। সর্বশেষ গত বছর ১ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ