৫ নং ওয়ার্ডে ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম, কাউন্সিলর রেজওয়ানের বাসা ঘেরাও
সিলেট নগরীর ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদের বাসায় ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ওয়ার্ডের হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষ। করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া এই হতদরিদ্র ও অসহায় পরিবারের লোকেরা বৃহস্পতিবার সকালে রেজওয়ানের বাসা এবং অফিসের সামনে বিক্ষোভ করে। এদিকে সিসিক থেকে ত্রাণ যথেষ্ট পরিমাণ পাননি বলে দাবি করেছেন কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ। তবে তাও মানতে নারাজ এই অসহায় মানুষজন। সঠিকভাবে ত্রাণ না পাওয়ার জন্য তারা কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদকে দায়ী করছেন।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সরকার গরিবের তালিকা করলেও রেজওয়ান ত্রাণ বিতরণকালে স্বজনপ্রীতি আর নয়ছয় করেছেন। তাই এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউন্সিলর রেজওয়ানের আশপাশ এবং কাছের লোক ছাড়া অসহায় অনেক পরিবার এই ত্রাণ পায়নি।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করে আরো বলেন, নিজের লোকদের দিয়ে রেজওয়ান একটি তালিকা তৈরী করেছেন। সেই তালিকায় ওয়ার্ডের অনেক অসহায় পরিবারের নামো তুলেননি কাউন্সিলরের লোকেরা। তাছাড়া যাদের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করেছেন তারা এসকল অসহায় পরিবারের ত্রাণ নিজেদের ঘরে নিয়ে মজুদ করেছেন। কাউন্সিলর কার্যালয়ে গিয়েও অনেক সময় রেজওয়ানকে পাওয়া যায়না। এমনকি অফিসের সচিবের কাছেও ভোটারদের আইডি কার্ডের ফটোকপি দিতে চাইলেও সচিব তা গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই ৫নং ওয়ার্ডে ভোটারা প্রশাসনের মাধ্যমে তাদের প্রাপ্ত ত্রাণ চান।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী একজন বিক্ষোভকারী জানান, রেজওয়ান আহমেদ হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষের সাথে প্রতারণা করছেন। তিনি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের খাদ্য ফান্ডের বরাদ্ধকৃত খাদ্য সামগ্রী তার বাসার গোডাউনে ত্রানের চাল, ডাল, তেল, লবন, পিয়াজ ও আলু মজুদ রেখেছেন। এই করোনা পরিস্থিতে তিনি তার ভোট ব্যাংক তৈরী করছেন এবং নিজের লোকদের দিচ্ছেন। তবে অসহায় মানুষদের এসব দেওয়া হচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া হতদরিদ্র ও অসহায় পরিবারগুলো বৃহস্পতিবার সকালে তার বাসা এবং অফিসের সামনে বিক্ষোভ করলেও তিনি তাতে কোনো সাড়া দেননি। আমাদের ওয়ার্ডে এখোনো অনেক অসহায় পরিবার না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে! সেই খবর রাখছেন না এই জনপ্রতিনিধি!
উল্লেখ্য, এর আগেও ৫নং ওয়ার্ডের হুসনাবাদে ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ তোলায় কাউন্সিলর রেজওয়ান ও তার লোকজনের সাথে হাতাহাতি হয় স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার।
এসময় রনি গাজী নামে এক যুবককে আটকে রেখে পুলিশ এনে ত্রাণ লুটপাটের অভিযোগ দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয় তাকে। আটক রনিকে ২০ ঘন্টা আম্বরখানা পুলিশ ফাঁড়িতে রেখে পরে থানায় নিয়ে ১৮ প্যাকেট ত্রাণ লোটপাট ও সরকারি কাজে বাধা প্রদাননসহ কয়েকটি ধারায় মামলা দেয়া হয়।
রনি গাজী চাচা দিলুয়ার হোসেন দিলু (দিলু গাজী) কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদের সাথে এ বিষয়ে সমাধান করতে গেলে রেজওয়ান আহমদ তার উপরও ক্ষিপ্ত হন। রনি গাজীর সাথে দিলুয়ার হোসেন দিলুকেও মামলায় আসামি করা হয়।
এর প্রতিবাদে দিলুয়ার হোসেন দিলু সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, সিলেট জেলা প্রশাসক ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন। এই অভিযোগে স্থানীয় দেড়শ বাসিন্দা সাক্ষর করে কাউন্সিল রেজওয়ান আহমদের করা লোটপাটের ঘটনা মিথ্যা বলে অবহিত করেন।
এ নিয়ে এলাকায় তুমূল আলোচনা-সমালোচনা চলছে।