রক্তাক্ত সীমান্তেই বছর শুরু, নিহত ১৫

ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠকে বার বার প্রতিশ্রুতির পরও থামছে না বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি হত্যাকান্ড। বছরের প্রথম ২৩ দিনে ১৫ বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করেছে ভরতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ।

সংবাদমাধ্যম বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে বছরজুড়ে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন ১৪ জন। সেখানে ২০২০ এর প্রথম মাসেই ২০১৮ এর সারা বছরের সীমান্ত হত্যার সংখ্যার চেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে বিএসএফ। ২০১৯ সালে ভারতের সীমান্তরক্ষা বাহিনী- বিএসএফ’র হাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৮ জন বাংলাদেশি। এক বছরের ব্যবধানে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে প্রায় তিনগুণ দাঁড়ায়।

এরমধ্যে বৃহস্পতিবার নওগাঁয় তিনজন এবং যশোরের বেনাপোল সীমান্তে একজন বিএসএফের হাতে নিহত হন। এছাড়া বুধবার লালমনিরহাটে নিহত হন দু’জন। এদিকে বাংলাদেশের সীমান্ত প্রহরী বিজিবির পক্ষ থেকে একের পর এক প্রতিবাদ ও পতাকা বৈঠকের পরও হত্যা বন্ধ না হওয়ায় ক্ষোভ ও আতঙ্ক বাড়ছে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের। ফেলানীসহ বিভিন্ন সময় সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে প্রাণ হারাচ্ছে বাংলাদেশিরা। এ নিয়ে দেশ-বিদেশে নানা সমালোচনার মুখে পড়ে বিএসএফ।

সর্বশেষ গত ২৫ থেকে ২৯ ডিসেম্বর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয় বিজিবি- বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক। সেখানে সীমান্তহত্যা বন্ধে বাংলাদেশকে আশ্বাসও দেয় বিএসএফ। তারপরও বন্ধ হয়নি সীমান্তহত্যা। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার নওগাঁ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে তিন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।

বিজিবি জানায়, সকালে নওঁগা জেলার দুয়ারপাল সীমান্তে বাংলাদেশের ভেতরে যায় কয়েকজন ব্যবসায়ী। এ সময় তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে ভারতের ক্যাদারীপাড়া ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা। এতে সন্দীপ, কামাল ও মফিজ উদ্দিন নামে তিনজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া সকালে বেনাপোল সীমান্ত থেকে হানিফ (৩৩) নামে এক বাংলাদেশিকে তুলে নিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে তাকে হত্রঅ করে বিএসএফ সদস্যেরা।

এর আগে বুধবার লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রণ গেছে দুই বাংলাদেশির। বিজিবি ও প্রশাসনের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের ২৩ দিনে বিএসএফের হাতে নিহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। এরমধ্যে শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিহত হয়েছেন ৬ জন, নওগাঁয় ৩, যশোরে একজন এবং রংপুর বিভাগের বিভিন্ন সীমান্তে ও ঘটেছে পাঁচটি হত্যাকান্ড। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্ক বাড়ছে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ