গৃহবধূর নগ্ন ভিডিও ধারণ করে চাঁদা দাবি

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর এলাকায় এক গৃহবধূর নগ্ন ভিডিও ধারণ করে চাঁদা দাবির অভিযোগে আব্দুল জলিল (৪৫) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ওই গৃহবধূ নিজেই বাদি হয়ে তিনজনকে আসামি করে ফুলবাড়ী থানায় এ সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করেন। পরে শুক্রবার (১৭ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় মামলার প্রধান আসামী আব্দুল জলিলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার আব্দুল জলিল উপজেলার পৌর এলাকার দক্ষিণ সুজাপুর গ্রামের মৃত বছির উদ্দিনের ছেলে।

থানায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারসূত্রে জানা যায়, ওই গৃহবধূর সঙ্গে প্রতিবেশী আব্দুল জলিলের সখ্যতা গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে ২০১৯ সালের ৫ জানুয়ারি সকাল ১০টায় ওই গৃহবধূকে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান প্রতিবেশী আব্দুল জলিল। এ সময় আব্দুল জলিল ও তার সহযোগী আব্দুর রহিম (৩০) ওই গৃহবধূর সাথে দৈহিক মেলামেশায় লিপ্ত হন। আব্দুল জলিল গোপনে ভিডিও ক্যামেরা বসিয়ে সেই মেলামেশার ভিডিও ধারণ করেন।

ওই ঘটনার পর আব্দুল জলিল গোপনে ধারণকৃত নগ্ন ভিডিওটি সেই গৃহবধূকে দেখিয়ে তার কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেন। দাবিকৃত চাঁদার অর্থ না পেলে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।

আব্দুল জলিলের হুমকির মুখে এবং নিজের মানসম্মান রক্ষায় বাধ্য হয়ে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি আব্দুল জলিলকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ভিডিওটি উদ্ধারের চেষ্টা করেন গৃহবধূটি। কিন্তু ভিডিওটি না দিয়ে উপরন্তু আরও টাকা দাবি করে জলিল ও তার সহযোগী আব্দুর রহিম। এরপর থেকে টাকার জন্য ওই গৃহবধূকে বিভিন্নভাবে চাপ দিতে থাকে তারা।

একই সময়ে আব্দুল জলিলের অপর এক সহযোগী শামীম মুঠোফোনে ওই গৃহবধূকে দাবিকৃত টাকা দিয়ে ভিডিওটি নেওয়ার জন্য বলেন। টাকা না দিলে ভিডিওটি ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে শামীমও হুমকি দেন তাকে। নগ্ন ওই ভিডিও নিয়ে গৃহবধূটি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। শেষে ভিডিও ধারণকারী আব্দুল জলিল, আব্দুর রহিম ও শামীমকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন তিনি।

ঘটনার শিকার নারীর স্বামী জানান, আব্দুল জলিল প্রতিবেশী হওয়ার সুবা্দে তাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই সম্পর্কের সূত্র ধরে ২০১৯ সালের ৫ জানুয়ারি কৌশলে তার স্ত্রীর নগ্ন ভিডিও ধারণ করে চাঁদা দাবি করে জলিল। দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেওয়ায় ওই ভিডিওটি বিভিন্ন মানুষের মোবাইল ফোনে সরবরাহ করেছে সে।

থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, গত বৃহস্পতিবার ওই গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে আব্দুল জলিল, আব্দুর রহিম ও শামীম নামের তিনজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯/৩ ধারাসহ পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের ৮/২/৩ ধারায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলা সূত্র ধরে গত শুক্রবার (১৭ জানুয়ারী) মামলার প্রধান আসামী আব্দুল জলিলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। একইসঙ্গে আব্দুল জলিলকে ৫ দিনের রিমান্ডের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ